প্রেসনিউজ২৪ডটকমঃ তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি যেমনি ঘরের শত্রু বিভীষণ। এমনি আওয়ামী লীগের শত্রু আওয়ামীলীগ, ফাক বুজে গোল দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বিএনপি’র বহিষ্কৃত নেতা। ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৪র্থ ধাপে বরগুনার তালতলী উপজেলায় এমনটাই বোঝা যাচ্ছে। এ উপজেলায় ৫ জুন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দু’জন ও বিএনপি’র একজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ত্রিমুখি লড়াইয়ের সম্ভাবনা থাকলেও বর্তমানে সুবিধাজনক অবস্থানে নেই বিএনপি প্রার্থী। তবে প্রচারণার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শত্রু আওয়ামীলীগ থাকলে ফাঁকে হ্যাটট্রিক করতে পারে বিএনপি’র ওই বহিষ্কৃত নেতা।
এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির ঘোড়া প্রতীক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ছোটবগী ইউপি চেয়ারম্যান মুহাঃ তৌফিকউজ্জামান তনুর বড় ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু আনারস প্রতীক এবং উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব (বহিষ্কৃত) বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিয়া মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক মটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সম্প্রতি আলোচিত এক নারী কেলেঙ্কারি নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দই গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামীলীগ সভাপতি রেজবী উল কবির জমাদ্দার ও সাধারণ সম্পাদকের বড় ভাই মনিরুজ্জামান মিন্টু। এ দুই গ্রুপের কোন্দল এখন ভয়াবহ আকারে রূপ নিয়েছে। আওয়ামী লীগের এ দু’ গ্রুপের কোন্দলের ফাঁকে ভোটের মাঠে গোল দিতে চায় বিএনপি’র সেই বহিষ্কৃত নেতা মিয়া মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক। সে বর্তমানে একটা সুবিধাজনক স্থানে না থাকলেও গোলের অপেক্ষায় প্রচার-প্রচারণায় রয়েছে ব্যস্ত।
আওয়াগীলীগের দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা বলছেন, এই উপজেলায় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী হাওয়ায় দলের ভোট হবে ভাগাভাগি। এই সুযোগ ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলে শেষ পর্যন্ত বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গেই লড়াই করতে হবে আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতার । অন্যদিকে ভোট বর্জনের জন্য উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শহিদুল হকের নেতৃত্বে উপজেলার হাটবাজারে লিফলেট বিতরনসহ বিভিন্ন প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এ প্রচারণায় বিএনপি মনা ভোটাররা ভোটদানে বিরত থাকলে লড়াই হবে আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগে। সাধারণ ভোটাররা বলছেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু নির্বাচিত হওয়ার পর সাড়ে তিন বছর চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্তমান চেয়ারম্যান রেজবী উল কবির জোমাদ্দার গত ৫ বছর চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। এরা দুজনই ক্ষমতাসীন দলের নেতা। এদের দুই জনেরই ‘সুনাম-বদনাম’ দুটি রয়েছে । আর এ এলাকায় এই দুই জনেরই অনেক প্রভাব রয়েছে। এরা দুজনেই ভোটের মাঠ চশে বেড়াচ্ছেন।
এ জন্য অনেকেই ধারণা করছেন লড়াইটা আওয়ামীলী বনাম আওয়ামীলীগে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।মটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, আমি ভাইস চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় কোনো মানুষের উপকার করতে না পারলেও কোন ক্ষতি করি নাই। চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষের পাশে থাকার। অন্য যারা প্রার্থী হয়েছে তাদের অনেক টাকা আছে। আমার তেমন টাকা নেই।
তাই জনগন আমাকে ভালোবেসেই ভোট দিবে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আনারস প্রতীকের প্রার্থী মনিরুজ্জামান মিন্টু বলেন, এবার তো দলীয় ভোট হচ্ছে না। এজন্য ভোটাররা দলের চেয়ে ব্যক্তিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বেশি। আমি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাই ভোটাররা সবকিছু বিবেচনায় রেখে আমাকে ভোট দেবেন। বর্তমান চেয়ারম্যান ও ঘোড়ার প্রতীকের প্রার্থী রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, আমি চেয়ারম্যান থাকাস্থায় এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি।
আমি কোনো দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলাম না। আমার সময়ে কোনো সন্ত্রাস ছিলো না। সাধারণ জনগন এবার আমার পক্ষে কাজ করছে। তাছাড়া যে তিন জন প্রার্থী আমরা আছি তার মধ্য থেকে সাধারণ মানুষ যদি আমাকে চায় তাহলে আমি বিজয়ী হবো।